Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

অর্জনসমূহ

মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর ১৯৭২ সালে কুমিল্লায় এক জনসভায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান “মাছ হবে দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী সম্পদ” এ মর্মে ঘোষনা দেন। তাঁরই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৎস্য সম্পদের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রূপকল্প,২০২১ ও ২০৪১-এ স্থিরকৃত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে মৎস্যখাতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। আজ বাংলাদেশে তৈরী পোশাক শিল্পের পরই মৎস্য ও মৎস্যজাত দ্রব্য সর্বাধিক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে। শুধু তাই নয় গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আমিষের ৬০ শতাংশ যোগান দেয় মাছ।

 বাংলাদেশ এখন মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুয়ায়ী,202০-202১ অর্থ বছরে মাছ উৎপাদন হয়েছে ৪৬.২৮ লক্ষ মেট্রিক টন। যা ২০০৮-০৯ সালের মোট উৎপাদনের চেয়ে (২৭.০১ লক্ষ মে. টন) চেয়ে ৬৫.৩২ শতাংশ বেশি। বিগত ১২ বছরে মৎস্যখাতে উৎপাদন প্রবৃদ্ধি অর্জন ৫.০১ শতাংশ।

১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরে মাছের মোট উৎপাদন ছিল ৭ দশমিক ৫৪ লাখ মেট্রিক টন। ৩৭ বছরের ব্যবধানে ২০২০-২১ অর্থবছরে এই উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৪৬ দশমিক ২৮ লাখ মেট্রিক টন। অর্থাৎ, এই সময়ের ব্যবধানে মোট মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ছয় গুণের অধিক। সরকারের বাস্তবমুখী কার্যক্রমের ফলে বাংলাদেশ এখন মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ১২ শতাংশের অধিক (১৪ লক্ষ নারীসহ ১৯৫ লক্ষ জনগোষ্ঠী)  এ সেক্টরের বিভিন্ন কার্যক্রমে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিয়োজিত থেকে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করছে। মৎসজাত উৎস থেকে প্রাণীজ আমিষের চাহিদা পূরণ, দারিদ্র্য বিমোচন ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্তমান সরকার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। মৎস্য খাতের এ অনন্য সফলতা ধরে রাখার লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এগুলো হলো- জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ জলাশয়ের আবাসস্থল উন্নয়ন ও প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র সংরক্ষণ, পরিবেশ বান্ধব চিংড়ি চাষ সম্প্রসারণ, সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের সহনশীল আহরণ, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা এবং স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ মাছ সরবরাহ এবং মৎস্য ও মৎসজাত পণ্য রপ্তানি।

মৎস্যখাত বর্তমান সরকারের একটি অন্যতম অগ্রাধিকারভুক্ত খাত। বৈশ্বিক মহামারী জনিত প্রতিকূল পরিবেশে দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা পূরণ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এ খাতে পরিকল্পিত উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রাকৃতিক জলাশয়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ, পরিবেশ বান্ধব ও উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর কার্যক্রম গ্রহণের ফলে দেশ আজ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী বিগত ১০ বছরের হিসেবে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। দেশের সাফল্য বিশ্ব পরিমণ্ডলেও স্বীকৃত। ইলিশ উৎপাদনকারী ১১ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে প্রথম, অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ আহরণে বাংলাদেশ তৃতীয়, মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে চতুর্থ এবং বদ্ধ জলাশয়ে মাছ উৎপাদনে পঞ্চম। তেলাপিয়া উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ এবং এশিয়ার মধ্যে তৃতীয়। পাশাপাশি বিশ্বে সামুদ্রিক ও উপকূলীয় ক্রাস্টাশিয়া ও ফিনফিশ উৎপাদনে যথাক্রমে ৮ম ও ১২ তম স্থান অধিকার করেছে।


 জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ‘‘The state of World Fisheries and Aquaculture 2020’’ এর প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ আহরণে তৃতীয় স্থান অর্জন করেছে।


সারাবিশ্বে প্রাকৃতিক উৎস থেকে মোট ৯০ লাখ টন মাছ উৎপাদন হয় যেখানে বাংলাদেশে উৎপাদন হয় ১০ লাখ টন । এ প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে দেশি প্রজাতির মাছের উন্নত জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে বাংলাদেশে মাছ উৎপাদন বেড়েই চলছে। পাশাপাশি ইলিশের প্রজনন মৌসুমে নদীতে জাটকা নিধন বন্ধের ও মা ইলিশ রক্ষার মাধ্যমে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।


মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে অন্যতম ভূমিকা ইলিশ মাছের। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩২ হাজার ৭৯৫ মেট্রিক টন যা ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে ইলিশের মোট উৎপাদনের (২.৯৯ লক্ষ মে. টন) চেয়ে ৭৮.২৬ শতাংশ বেশি। অধিদপ্তরের হিসেবে, গত অর্থ বছরে দেশে উৎপাদিত মাছের প্রায় ১২ শতাংশই ছিল ইলিশ।

ইলিশের উৎপাদন বাড়ার প্রধান কারণ, কয়েক বছর ধরে ইলিশ রক্ষায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও নৌবাহিনী সমন্বিতভাবে কাজ করছে। সবার সহায়তায় বিশেষ অভিযানও পরিচালনা করা হয়। তাতে জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষা পায়। এ কারণেই ইলিশের উৎপাদন বাড়ছে।

২০১৬ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, বাংলাদেশের মানুষের মাছ খাওয়ার পরিমাণও বেড়েছে। আগে জনপ্রতি প্রতিদিন গড়ে ৬০ গ্রাম মাছ খেত, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬২ দশমিক ৫৮ গ্রাম।

বিশ শতকজুড়ে পরিবেশগত নানা আন্দোলন ও সম্মেলন আমাদের সামনে নিয়ে এসেছে একের পর এক পরিবেশবান্ধব মডেল। এসব মডেলের মধ্যে গ্রিন ইকোনমি বা সবুজ অর্থনীতি মডেল ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। একুশ শতকে এসে প্রয়োজনীয়তা দেখা দিল এ মডেলের অধিকতর সম্প্রসারণের। গ্রিন ইকোনমি মডেলের পরবর্তী ধাপ তথা সম্প্রসারণই ব্লু-ইকোনমি নামে পরিচিত। যা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায় একুশে শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার একটি কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে বিশ্বজুড়ে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছে। এ অর্থনীতিকে সমুদ্র অর্থনীতিও বলা হয়। তার উপাদানগুলো হচ্ছে জাহাজ বাহিত বা সমুদ্র বাহিত বানিজ্য, সাগর তলদেশে বিদ্যমান তেল, গ্যাস, বন্দর, খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান, উপকূলীয় পর্যটন শিল্প, নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন ও মৎস্য আহরণ ইত্যাদি।

বিশ্বের প্রায় ৩৫ কোটি মানুষের জীবিকা সরাসরি সমুদ্রের উপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের মৎস্য উৎপাদনের প্রায় ২০ শতাংশ আসে সমুদ্র থেকে। বিশ্বের মোট মৎস্য উৎপাদনের প্রায় ১৬ শতাংশ অবদান খোদ বঙ্গোপসাগরের। সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহনের মাধ্যমে এ উৎপাদন আরো বহুগুণে বৃদ্ধি করা সম্ভব। কেবল সমুদ্র অর্থনীতির সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বাংলাদেশে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখেই যথেষ্ট আর্থসামাজিক উন্নয়ন সাধন করা যেতে পারে। পরিবেশ দূষণ রোধের বিষয়কে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে ব্লু-ইকোনমি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, অনবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার হ্রাস ও জাতীয় আয় বৃদ্ধিকে গুরুত্বারোপ করে।

বঙ্গোপসাগরে রয়েছে ৪৭৫ প্রজাতির মাছ। প্রতি বছর সেখান থেকে ৬৬ লাখ টন মৎস্য আহরণ করা যেতে পারে; কিন্তু বাস্তবে আমরা সেখান থেকে খুব কমই আহরণ করছি। সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা দেশজ উৎপাদন অনেকাংশে বাড়িয়ে ফেলতে পারি। এজন্য আমাদের আধুনিক প্রশিক্ষণের পাশাপশি মাছ ধরার কৌশলেও পরিবর্তন নিয়ে আসতে হবে।

এছাড়া বাংলাদেশ সমুদ্র থেকে যেসব সম্পদ পেতে পারে তা হলো: বিভিন্ন খনিজ পদার্থ যেমন গ্যাস, তেল, কপার, ম্যাগনেশিয়াম, নিকেলসহ আরো অনেক মূল্যবান ধাতু। সামুদ্রিক সম্পদ সুষ্ঠুভাবে ব্যবহার করে অর্থনৈতিক বিকাশ সাধনের জন্য আমাদের আগে সুনির্দিষ্ট খাতগ্রলো যেমন: অ্যাকুয়াকালচার, পর্যটন, মেরিন বায়োটেকনোলজি, শক্তি (তেল-গ্যাস), সমুদ্রতলে খনি খনন ইত্যাদি চিহ্নিত করতে হবে।

সমুদ্রসীমা নিয়মে মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধের অবসানের পর আমরা বাংলাদেশের আয়তনের প্রায় ৮০ শতাংশের মতো বিশাল সমুদ্র এলাকা অর্জন করি। যা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য গৌরবের ও আনন্দের। কিন্তু এ সুবিশাল সম্পদ যদি আমরা সঠিকভাবে দেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে না পারি তাহলে আমাদের এ অর্জনের কোন মূল্য থাকবে না।

২০২২ সাল নাগাদ বিশ্বের যে চারটি দেশ মাছ চাষে সাফল্য অর্জন করবে, তার মধ্যে প্রথম হচ্ছে বাংলাদেশ। এরপর থাইল্যান্ড, ভারত ও চীন। নতুন জলসীমার অধিকার পাওয়ার ব্লু-ইকোনমি প্রসারে বাংলাদেশের জন্য এই বিশাল সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির পর সামুদ্রিক সম্পদ আহরণের সম্ভাবনাকে বর্তমান সরকার গুরুত্ব সহকারে দেখছে। মাছের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আহরণে আমরা অনেক পিছিয়ে। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার মতো ট্রলার, প্রশিক্ষিত জনবল ও প্রয়োজনীয় অন্যান্য সরঞ্জাম আমাদের অত্যাবশ্যক। আমাদের উপকূল এবং বিশাল সমুদ্র অঞ্চলের মৎস্য সম্পদকে সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা ও আহরণের আওতায় আনা হলে এদেশের অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।

বিপন্নপ্রায় মাছের প্রজাতির সংরক্ষণ, অবাধ প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির মাধ্যমে সার্বিক মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি হয়েছে। গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন নদ-নদী ও অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে ৪৩২ টি মৎস্য অভয়াশ্রম স্থাপন করা হয়েছে। অভয়াশ্রম-সংশ্লিষ্ট জলাশয়ে মাছের উৎপাদন ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি হয়েছে। অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার ফলে বিলুপ্তপ্রায় এবং বিপন্ন ও দুর্লভ প্রজাতির মাছ, যথা একঠোঁট, টেরিপুঁটি, মেনি, রানী, গোড়া গুতুম, চিতল, ফলি, বামোস, কালিবাউশ, আইড়, টেংরা, সরপুঁটি, মধু পাবদা, রিঠা, কাজলি, চাকা, গজার, বাইম ইত্যাদির তাৎপর্যপূর্ণ পুনরাবির্ভাব ও প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে। অভয়াশ্রমে দেশি কই, শিং, মাগুর, পাবদা ইত্যাদি মাছের পোনা ছাড়ার ফলে এসব মাছের প্রাচুর্যও বৃদ্ধি পেয়েছে।

গত কয়েক দশকে দেশে চাষ করা মাছে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে। শিং, মাগুর, পাবদার মতো আরও বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ হারিয়ে যেতে বসেছিল। গবেষণার মাধ্যমে এই জাতের মাছ এখন চাষ হচ্ছে। চাষ করা মাছ থেকে প্রায় ৬০ শতাংশ উৎপাদন হয়। সাগরে মাছ ধরার নতুন নতুন সরঞ্জাম কেনা হলে মাছ উৎপাদন বেড়ে যাবে। ওই সব যন্ত্রের মাধ্যমে কোন এলাকায় বেশি মাছ আছে তা নিশ্চিত হওয়া গেলে সাগর থেকে মৎস্য আহরণ আরও বেড়ে যাবে। তাতে সার্বিকভাবে মৎস্য উৎপাদন আরও বাড়বে।

দেশে বিপুল পরিমাণ পাঙাশ, তেলাপিয়া ও রুইজাতীয় মাছের উৎপাদন বেড়েছে। থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, চীনের উদ্ভাবিত মাছের জাত এখন বাংলাদেশের মৎস্য উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন শিক্ষিত তরুণেরা চাকরির দিকে না ঝুঁকে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এ ছাড়া ব্যাংকগুলো মাছ ও কৃষিকাজে সহজ শর্তে ঋণ দিয়েছে। এতে মাছের দিকে মানুষ ঝুঁকেছে। বাজারে মাছের ব্যাপক চাহিদাও মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির অন্যতম কারণ ।

মৎস্য ও মৎস্যজাত দ্রব্য বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি পণ্য। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৭৩,১৭১ মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করে ৪ হাজার ২৫০ কোটি টাকার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে।

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০১৯ অনুসারে মোট দেশজ উৎপাদনের ৩.৫০% মৎস্যের অবদান রয়েছে। দেশের মোট কৃষি আয়ের ২৫.৭২ শতাংশ আসে মৎস্য থেকে। বিগত ৫ বছরে মৎস্যখাতে জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৬.২৮ শতাংশ। অভয়াশ্রম ব্যবস্থাপনা ও ইলিশ প্রজনন সূরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নের ফলে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ৩২ হাজার ৭৯৫ মে.টন, যা ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে ছিল ২ লাখ ৯৯ হাজার মে.টন। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ক্ষেত্রে মৎস্যখাত ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশ থেকে গুনগত মানসম্পন্ন হিমায়িত চিংড়ি ও মৎস্যজাত পণ্য বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করা হচ্ছে।